রমজান মাসে ইফতারের সময় জনপ্রিয় খাবার হলো ছোলা বা বুট। আমাদের দেশে ছোলার ডাল নানাভাবে খাওয়া হয়।
কাঁচা, রান্না করে মুড়ির সঙ্গে বা ডাল হিসেবে। বাজারে তেলে ভেজেও বিক্রি হয়। সবচেয়ে বেশি পুষ্টি হলো কাঁচা ছোলাতে।
পানিতে ভেজানো ছোলার খোসা ফেলে কাঁচা আদা কুচি দিয়ে খেলে তা শরীরের জন্য জোগাবে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি।
রান্না ছোলাতে তেল দেওয়া থাকে বলে এতে ফ্যাটের পরিমাণ রয়েছে।
মোটা ব্যক্তি বা উচ্চ রক্তচাপ আছে যাদের তারা কাঁচা ছোলা খান। তাদের জন্য অতিরিক্ত তেল, মসলা দেওয়া ছোলা হলো ঝুঁকিপূর্ণ।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে রান্না ছোলা খেতে পারেন নির্দিষ্ট পরিমাণে। যারা খোসাসহ ছোলা খেতে পারেন না, তাদের জন্য কাঁচা ছোলা যথেষ্ট উপকারী। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন বা আমিষ।
বুটের খোসাতে আছে ফাইবার। ফাইবার জাতীয় খাবার রক্তে চিনির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
ছোলার প্রোটিন দেহকে করে দৃঢ়, শক্তিশালী, হাড়কে করে মজবুত, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এর ভূমিকা অপরিহার্য। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম। যা দেহের হৃৎপিণ্ডের গতিকে সচল রাখতে সাহায্য করে।
কিন্তু কিডনির সমস্যা যাদের রয়েছে (ডায়ালাইসিস চলছে, রক্তে ক্রিয়েটিনিন, ইউরিক এসিড বা ইউরিয়ার পরিমাণ বেশি) তারা চিকিৎসক এর পরামর্শ ছাড়া যেকোনো ধরণের ছোলা খাবেন না।
যেকোনো ডালে পটাসিয়াম থাকে, যা রক্তে পটাশিয়াম এর পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। হাই ব্লাডপ্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ এর রোগীরা সীমিত পরিমাণে ছোলা খাবেন।
বাড়ন্ত শিশুদের দাঁত, হাড়, নখ, চুল, ত্বক এর পুষ্টির জন্য কাঁচা বা সিদ্ধ বুট ভীষণ উপকারী। তবে ছোটদের হজম শক্তি বড়দের তুলনায় দূর্বল থাকে। তাই তাদের জন্য সিদ্ধ বুট বেশি উপকারী।
গর্ভবতী নারীদের জন্য ছোলা বয়ে আনবে সুফল। মায়ের পেটে থাকাকালীন সময় থেকেই শিশুর গঠনের জন্য আমিষ অপরিহার্য।
তবে যেসব গর্ভবতী নারী উচ্চ রক্তচাপ, কিডনীর জটিলতা,
উচ্চ মাএার ইউরিক অ্যাসিড এর সমস্যায় ভুগছেন, তারা চিকিৎসক এর পরামর্শ ছাড়া এফতারে ছোলা খাবেন না।
পুষ্টির আশায় বেশি ছোলা হিতে বিপরীত হবে। তাই বয়স ও উচ্চতা অধিক ওজন থাকলে ছোলা কম খাওয়া উচিত।
করোনা মহামারীর জন্য লকডাউনের এই সময়ে হাঁটাচলার অভাবে যাদের ওজন বেড়ে গেছে, তারা ছোলা পরিহার করাই ভালো। কাঁচা বা সিদ্ধ বুট এর পরিবর্তে ফল বা সালাদ এর পরিমাণ বেশি হওয়া উচিত।
কাঁচা বা সিদ্ধ বুট রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে। তবে করোনা ভাইরাস এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, এই ধরনের যুক্তি এখনো কোন গবেষণা তে প্রমাণিত হয়নি।
ফারহানা মোবিন
চিকিৎসক, লেখক ও উপস্থাপিকা